মুহম্মদজাই উপজাতি কারা?

মুহম্মদজাই উপজাতি

উপজাতীয় জনগোষ্ঠীর সমন্বয়ে গঠিত আফগানিস্তানের ইতিহাস অতি বিচিত্র। এ উপজাতির মধ্যে রয়েছে গিলজাই ও আবদালি। এক সময় আবদালি উপজাতিগণ ছিল খুবই প্রভাবশালী। এ উপজাতির দুটি শাখা ছিল  পুপুলজাই এবং বারাকজাই। এই দুই শাখা থেকে উদ্ভুত সাদোজাই এবং মুহম্মদজাই ছিল অধিকতর প্রভাবশালী। মূলত এ দুই উপজাতিই আফগানিস্তানের ইতিহাসে দুইশত বছর প্রভাব বিস্তার করে।

মুহম্মদজাই উপজাতির পরিচয়

আফগানিস্তানের শাসন পরিক্রমায় উপজাতিদের প্রভাব অত্যন্ত প্রকট ছিল। আবদালি উপজাতি থেকে পরবর্তীকালে মুহম্মদজাই উপজাতির উদ্ভব হয়। ১৭৭৩ সালে আহমদ শাহের মৃত্যুর পর সাদোজাই উপজাতির প্রতিপত্তি হ্রাস পায়।

এর ফলে বিশাল দুররানি সাম্রাজ্যের পতন হয় এবং সংঘবদ্ধ রাষ্ট্র হিসেবে আফগানিস্তানের অস্তিত্ব বিলুপ্ত হয়। দুররানি। উপজাতির অপর শাখা মুহম্মদজাই গোত্রের প্রধান পায়েন্দা খান এ সময়ে স্বীয় ক্ষমতা প্রতিষ্ঠার প্রয়াস পান। আহমদ শাহ আবদালি বা দুররানি বংশধরদের মধ্যে কোন্দল শুরু হলে মুহম্মদজাই গোত্র তাদের অবস্থান সুদৃঢ় করে। পায়েন্দা খানের পুত্র ফতেহ খান মুহম্মদজাই গোত্রের প্রধান হলে সাদোজাই গোত্রের শাহ মুহম্মদ ১৮১৮ সালে তাকে হত্যা করলে মুহম্মদজাই গোত্র সাদোজাই গোত্রের বিরুদ্ধাচরণ করে। দুররানি বংশের পতনের পর মুহম্মদজাই গোত্রের অভ্যুত্থান হয়। ফতেহ খানের নৃশংস হত্যার পর মুহম্মদজাই গোত্রের কোনো বলিল্ঠ নেতা না থাকায় রাজনৈতিক শূন্যতার সৃষ্টি হয়।

১৮১৮ সাল হতে ১৮২৬ সাল পযর্ন্ত পায়েন্দা খানের পুত্রদের মধ্যে বিবাদ অব্যাহত থাকার ফলে মুহম্মদজাই গোত্র তাদের ক্ষমতা সুদৃঢ় করতে পারে নি। কিন্তু পায়েন্দা খানের সর্বকনিষ্ঠ পুত্র দোস্ত মুহম্মদ তার ভাইদের উপর কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হন। তিনি আহমদ শাহ আবদালির সাম্রাজ্যের ধ্বংস্তুপের উপর স্বীয় রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেন। এভাবেই মুহম্মদজাই উপজাতিগণ আফগানিস্তানের শাসন ক্ষমতায় আরোহণ করে।

দোস্ত মুহম্মদ মুহম্মদজাই গোত্রভুক্ত সর্দার ছিলেন। তিনি দুররানি বংশের পতনের পর স্বীয় ক্ষমতা প্রতিষ্ঠা করার প্রয়াস পান। সাদোজাই অপেক্ষা মুহম্মদজাই গোত্রের মধ্যে বিরোধ থাকলেও তারা আফগানিস্তানে একটি বংশানুক্রমিক রাজবংশ প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয়।