হামাস কাকে বলে?

হামাস

স্মরণাতীত কাল থেকে ফিলিস্তিন মানব ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে আছে। ফিলিস্তিন মধ্যপ্রাচ্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ দেশ। ১৯১৭ সালে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী বেলফোর ঘোষণার ফলে ১৯৪৮ সালে ফিলিস্তিন মাতৃভূমিতে ইহুদিরা ইসরাইল নামক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করে। ইসরাইল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পর থেকে ফিলিস্তিনে বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠন ও দলের সৃষ্টি হয়। ফিলিস্তিন হতে ইসরাইলকে মুক্ত করার জন্য ১৯৮৭ সালে হামাস গঠিত হয়। এই বিপ্লবী সংগঠন ফিলিস্তিনের মুক্তি আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

হামাসের পরিচয়

হামাস ফিলিস্তিনের প্রভাবশালী রাজনৈতিক ও সামরিক সংগঠন। ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে ইসরাইলের হাত থেকে মুক্ত করার জন্য হামাস নামক সংগঠন প্রতিষ্ঠা করা হয়। এই সংগঠনটি প্রতিষ্ঠা করেন শেখ ইয়াছিন আহমদ। হামাস শব্দের অর্থ সজীবতা ও উদ্দীপনা। সংগঠনটির পূর্ণ নাম হরকাতুল মুকাওয়ামা আল ইসলামিয়া। ১৯৮৭ সালে ইসরাইলে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে প্রথম ইন্তেফাদা বা গণঅভ্যুত্থানের সময় ১৪ ডিসেম্বর শেখ ইয়াছিন হামাস প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি মিসরের ইখওয়ানুল মুসলিমিনের অন্যতম সদস্য ছিলেন। হামাস ধীরে ধীরে ফিলিস্তিনের রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ সংগঠন হিসেবে পরিণত হয়েছে। হামাস প্রতিষ্ঠার পর নব্বই এর দশকে কাসেম বিগ্রেড নামে একটি সামরিক শাখা চালু করেন। এতে নতুন নতুন সদস্য যোগ দেয়। ফলে হামাসের সদস্য সংখ্যা বৃদ্ধি পায়। হামাস বেশ কয়েকবার ইসরাইলের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করে। অভিযানে বেশ কিছু সাফল্য অর্জন করলে এ সুনাম সাড়া মুসলিম বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে। এতে ইসরাইল সৈন্যরা ২০০০ সালের দিকে ২ জন হামাস নেতাকে হত্যা করে। তারপরও হামাস তার আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে। ২০০৬ সালে ফিলিস্তিনের জাতীয় নির্বাচনে হামাস জয় লাভ করে। এরপর হামাস ফিলিস্তিনের রাজনীতিতে প্রকাশ্যে চলে আসে। সংগঠনটির রাজনৈতিক প্রধান সিরিয়ার নির্বাসিত নেতা মেশাল।

হামাস ফিলিস্তিনের জাতীয় রাজনীতিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিপ্লবী সংগঠন। এই সংগঠনটি প্রতিষ্ঠার পর থেকে ফিলিস্তিনের মুক্তিকামী মানুষের বিভিন্ন দাবিদাওয়া আদায়ের জন্য সংগ্রাম করে যাচ্ছে। ফিলিস্তিনের রাজনৈতিক ইতিহাসে হামাসের অবদান অপরিসীম।