বেতার আধুনিক বিজ্ঞানের একটা বিষ্ময়কর আবিষ্কার। এ আবিষ্কারের ফলে মানুষ ঘরে বসে বিনা তারে রেডি ও যন্ত্রের মাধ্যমে হাজার হাজার কিলোমিটার দূরে কথাবার্তা, সংগীত, খবরাখবর, বক্তৃতা, আলোচনা ইত্যাদি তৎক্ষণাৎ শুনে নিতে পারছে। বেতার পৃথিবীর দূরত্বকে সম্পূর্ণভাবে ঘুচিয়ে দিয়ে সমগ্র বিশ্বের মধ্যে এক আশ্চর্য্য বিনা সূতোর বন্ধন রচনা করেছে।
আবিষ্কারঃ
১৮৯৬ সালে ইতালিয় বিজ্ঞানী ‘মার্কনী’ বেতারযন্ত্র আবিষ্কার করেন। মার্কনী ১৯০২ সালে ইংল্যাণ্ড থেকে আমেরিকা পযর্ন্ত সংবাদ প্রেরণ করতে সক্ষম হন। তখন বিজ্ঞানীরা রেডিও যন্ত্রের কারিগরি উৎকর্ষের দিকে নজর দিলেন। ১৯২০ সালে পূর্ণাঙ্গ রেডিও যন্ত্রের নির্মাণ কৌশল তাদের আয়ত্বে আসে।
রেডিও বা বেতার যন্ত্রের অবদানঃ
রেডিও মানব সভ্যতার ইতিহাসে এক বিষ্ময়কর অবদান। বিশ্বের মানুষে মানুষে যে ব্যবধান ছিলো তা বেতার যন্ত্রের আবিষ্কারের ফলে ঘুচেছে। বিশ্বের মানব গোষ্ঠীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ আত্মীয়তার বন্ধনকে মজবুত করেছে বেতার যন্ত্র। দূরকে করেছে নিকট, অজানাকে জানার সাহায্য। প্রচারকাজে বেতারের চেয়ে শক্তিশালী মাধ্যম আর নেই।
রেডিও এর রকম পদ্ধতিঃ
পৃথিবীর অধিকাংশ বড় বড় শহরে রেডিও স্টেশন আছে। কোথাও অধিক শক্তি সম্পন্ন মাইক্রোফোন এবং প্রেরকযন্ত্র আছে। মাইক্রোফোন শব্দ গ্রহণ করে এবং প্রেরকযন্ত্র তা ‘ইথারের’ সাহায্যে দূর-দুরান্তে পাঠিয়ে দেয়। গ্রাহকযন্ত্র তা গ্রহণ করে এবং আমরা তা শুনতে পাই।
রেডিও এর অনুষ্ঠানমালাঃ
রেডিও এর মাধ্যমে নানা ধরনের অনুষ্ঠান প্রচার করা হয়ে থাকে। গান, খবর আলোচনা, নাটক ইত্যাদি নিয়মিতভাবে প্রচার করা হয়। এছাড়া বিশেষ ধরনের অনুষ্ঠান যেমন কৃষকদের জন্য মহিলাদের জন্য, শিশুদের জন্য এবং সৈনিকদের জন্য ইত্যাদি অনুষ্ঠানও প্রচার করা হয়।
ব্যবহারঃ
রেডিও আমাদের বড়ো উপকারে আসে। এটি আমাদেরকে আনন্দদান ও শিক্ষাদান করে থাকে। এর মাধ্যমে বিদেশী ভাষা শিক্ষা করা সম্ভব। বিভিন্ন দেশের মধ্যে যোগসূত্রের বাঁধা দূর করে। রাজনৈতিক নেতাদের বক্তব্য, সমাজ সংস্কারকদের চিন্তাধারা এবং অন্যান্যদের ধ্যান-ধারণা আমরা এর মাধ্যমে শুনতে পারি। এভাবে সমগ্র পৃথিবী আমাদের কাছে ধরা দেয়।
অপব্যবহারঃ
রেডিও অপব্যবহৃতও হতে পারে। কখনো কখনো সরকার এর মাধ্যমে জনগণকে বিভ্রান্ত করে থাকে।
একসময়ের জনপ্রিয় রেডিও যন্ত্রটি যুবক-বৃদ্ধ, শিক্ষিত-অশিক্ষিত সকলের কাছে প্রিয় ছিল।