রাষ্ট্রবিজ্ঞান একটি গতিশীল শাস্ত্র হওয়ায় সময়ের পরিবর্তনের সাথে সাথে রাষ্ট্রবিজ্ঞানের ধ্যান ধারণাও পরিবর্তন হয়। রাষ্ট্রবিজ্ঞান অতীতের দিকে দৃষ্টি দিয়ে বর্তমানকে অনুধাবন করার প্রয়াস চালায় এবং ভবিষ্যতের কর্মপন্থা নির্ধারণে সহায়তা যোগায়। সমাজবিজ্ঞানের ক্রমবর্ধমান অগ্রগতি, বিশ্বের আর্থ সামাজিক, রাজনৈতিক ব্যবস্থার দ্রুত পরিবর্তনশীলতা, আন্তঃসমাজবিজ্ঞানের ক্রমবর্ধমান সহযোগিতার দাবি; নিত্যনতুন পদ্ধতি সংযোজন ইত্যাদি রাষ্ট্রবিজ্ঞানের প্রকৃতি ও আলোচনা ক্ষেত্রের পরিধিকে ক্রমান্বয়ে পরিব্যাপ্ত ও জটিল করে তুলেছে।
রাষ্ট্রবিজ্ঞানের প্রকৃতি
১. কল্যাণমূলক রাষ্ট্রঃ বর্তমানে রাষ্ট্রসমূহ কল্যাণমূলক রাষ্ট্র, শুধুমাত্র পুলিশি রাষ্ট্র নয়। মানুষের কল্যাণের তাগিদে পুলিশি রাষ্ট্রের পরিবর্তে কল্যাণমূলক রাষ্ট্রের উদ্ভব ঘটে। কল্যাণমূলক রাষ্ট্রের উদ্ভবের কারণে সনাতন কার্যাবলির পরিধি বাড়ছে। ফলে রাষ্ট্রবিজ্ঞানের পরিধিও বেড়ে গেছে ব্যাপকভাবে।
২. আন্তর্জাতিক তৎপরতা বৃদ্ধিঃ বর্তমান যুগ আন্তর্জাতিকতার যুগ। বর্তমান বিশ্বে রাষ্ট্রসমূহের মধ্যে উত্তেজনা বাড়ছে। এমনকি তারা একে অপরের সাথে সংঘর্ষে লিপ্ত হচ্ছে। সেই সাথে সাথে চলছে শান্তি ও সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ। আন্তর্জাতিক সংগঠন গুলো বর্তমানে এ ব্যাপারে অনেক বেশি তৎপর। এসব আন্তর্জাতিক তৎপরতা রাষ্ট্রবিজ্ঞানের পরিধিকে বাড়িয়ে দিয়েছে।
৩. রাজনৈতিক জীবনঃ সমাজবদ্ধ মানুষের রাজনৈতিক জীবনের আলোচনাই রাষ্ট্রবিজ্ঞানের কেন্দ্রীয় বিষয়। রাষ্ট্রকে কেন্দ্র করেই মানুষের রাজনৈতিক জীবন আবর্তিত হয়।
৪. রাজনৈতিক কাঠামোঃ বর্তমান জাতীয় রাষ্ট্রসমূহ রাজনৈতিক কাঠামো আজ আর সনাতন প্রকৃতির নয়। বর্তমানে রাজনৈতিক কাঠামোর রূপ দিন দিন পরিবর্তিত হচ্ছে। অতীতে রাষ্ট্রবিজ্ঞান শুধু রাজনৈতিক কাঠামোগত বিষয়ে সীমাবদ্ধ ছিল। বর্তমানে আধুনিক রাষ্ট্রবিজ্ঞানীগণ রাজনৈতিক কাঠামোর পরিবর্তে বাস্তবভিত্তিক কার্যকলাপের উপর জোর দিচ্ছেন।