ব্ল্যাকহোলের আকার!

ব্ল্যাকহোলের আকার

ব্ল্যাকহোলের আকার নির্ভর করে তার ভরের উপর। অনেক ক্ষুদ্র থেকে অনেক বৃহৎ আকারের হতে পারে৷ সবচেয়ে ক্ষুদ্র আকারের ব্ল্যাকহোলদের বলা হয় ‘মাইক্রো ব্ল্যাকহোল’। তবে কথা হলো, বাস্তবে এদের দেখা পাওয়া সম্ভব নয়। কারণ, এরা নাক্ষত্রিক ব্ল্যাকহোলের মতো সুপারনোভা বিস্ফোরণের মাধ্যমে সৃষ্ট নয়৷ বরং, মহাবিশ্বের শুরুর দিকে যখন তার প্রসারণ গতি ছিলো অত্যাধিক, তখন তার সমগ্র অংশ একই হারে প্রসারিত হয় নি, বরং অনেক অসমগতিতে। এতে ছড়িয়ে থাকা অনেক স্হানের বস্তু সংকুচিত হয়ে যায় ও এতেই এ ধরণের ব্ল্যাকহোলের সৃষ্টি হয়। তাত্বিকভাবে, মহাবিশ্বের শুরুর দিকে এসব ব্ল্যাকহোলের অস্তিত্ব থেকে থাকবে। কিন্তু হকিং বিকিরণের কারণে, তাদের সবাই ইতিমধ্যে নিঃশেষ হয়ে গেছে এবং এদের ভর বিকিরণ আকারে মহাবিশ্বে ছড়িয়ে আছে। এসব ব্ল্যাকহোলের আকার হতে পারে কয়েক মি.মি. থেকে কয়েক ফেমটোমিটার পর্যন্ত।

সর্ববৃহৎ ব্ল্যাকহোল

অপরদিকে সর্ববৃহৎ ধরণের ব্ল্যাকহোল হলো সুপারম্যাসিভ ব্ল্যাকহোল৷ সাধারণ বৃহৎ স্পাইরাল গ্যালাক্সি ও কোয়াসারের কেন্দ্রে এদের অবস্হান। এদের ভর অত্যাধিক হওয়ায় আকারও হয় সুবিশাল। এদের সৃষ্টি সম্পর্কে এখনও নিশ্চিতভাবে কিছু জানা যায় নি। তবে ধারণা করা হয়, আদিম মহাবিশ্বে গ্যালাক্সি সৃষ্টির সময় যখন বৃহৎ পরিসরে বস্তুদের মহাকর্ষীয় সংকোচন চলছিলো, তখন কেন্দ্রের দিকে সবচেয়ে বেশি সংকোচন হয় ও এতে সেখানে এ ধরণের ব্ল্যাকহোলের সৃষ্টি হয়।

আবার এমনও হতে পারে, মহাবিশ্বের শুরুর দিকে সব জায়গায় সমান ঘনত্বের বস্তু ছিলো না। যেসব জায়গায় বস্তুর ঘনত্ব বেশী ছিলো সেসব জায়গায়ই মহাকর্ষীয় প্রভাবে সংকুচিত হয়ে ব্ল্যাকহোল সৃষ্টি হয়েছে। আর হয়তো, এভাবে অপেক্ষাকৃত কম দুরত্বে অনেক সংখ্যক ব্ল্যাকহোল সৃষ্টি হতে পারে৷ আর পরে তারা কোনভাবে মহাকর্ষীয় টানে একত্রে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। এভাবে হয়তো কয়েক হাজার ব্ল্যাকহোলের সমন্বয়ে এধরনের বৃহৎ ব্ল্যাকহোলের জন্ম হয়ে থাকতে পারে। কয়েক হাজার ব্ল্যাকহোলের সমন্বয়ে সৃষ্টি বলেই হয়তো এদের আকার এতো বড়ো। কারন, এতে তাদের ভর বৃদ্ধি পেয়েছে আর ভর বৃদ্ধি পেলে তাদের ব্যাসার্ধ বৃদ্ধি পায়। এদের আকার হয় সূর্যের তুলনায় কয়েক মিলিয়ন থেকে বিলিয়নগুণ পর্যন্ত।

এছাড়া, এই দুই ব্ল্যাকহোলের মাঝামাঝি পর্যায়ে আরও দুই ধরণের ব্ল্যাকহোল রয়েছে। স্টেলার ও ইন্টারমিডিয়েট মাস ব্ল্যাকহোল৷ সাধারণ প্রক্রিয়ায়ই নক্ষত্রের সুপারনোভা বিস্ফোরণের মাধ্যমে এদের সৃষ্টি হয়।