পারস্যের রাজনৈতিক ইতিহাসে আঠারো শতকের শেষ দিকে কাজার বংশের উত্থান একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা। এ বংশের প্রকৃত প্রতিষ্ঠাতা হলেন আগা মোহাম্মদ খান। আর শ্রেষ্ঠ শাসক হলেন ফতেহ আলী শাহ। তিনি ১৭৯৭ সাল থেকে ১৮৩৪ সাল পযর্ন্ত শাসনকার্য্য পরিচালনা করেন। ফতেহ আলী শাহ তার স্বীয় মেধা ও যোগ্যতা দ্বারা এই সাম্রাজ্যকে সুপ্রতিষ্ঠিত করেন।
ফতেহ আলী শাহের পরিচয়
ফতেহ আলী শাহ ছিলেন ইরানের কাজার বংশের শ্রেষ্ঠ শাসক।তিনি আগা মোহাম্মদ খানের ভ্রাতুষ্পুত্র। আগা খানের মৃত্যুর পর ১৭৯৭ সালে তিনি পারস্যের সিংহাসনে আরোহণ করেন। ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হওয়ার পর তাকে কতগুলো প্রাথমিক সমস্যায় সম্মুখীন হতে হয়। স্বীয় মেধা, যোগ্যতা দ্বারা এসব সমস্যার সমাধান করে তিনি সিংহাসনকে কন্টকমুক্ত করেন। প্রথমে তিনি নাদির মির্জাকে খোরাসানের শাসনকর্তা নিযুক্ত করেন। তবে তার বিরুদ্ধে খোরাসানবাসীর অভিযোগ থাকায় তাকে মৃত্যুদণ্ড দেন। ফতেহ আলী শাহ যখন সিংহাসনে আরোহণ করেন তখন সাম্রাজ্যের অর্থনীতি দুর্বল ছিল। অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির জন্য ফতেহ বিদেশিদের সাথে মিত্রতা স্থাপন করেন। এতে বিদেশি শক্তি ফ্রান্স, ব্রিটেন, রাশিয়া পারস্যে প্রভাব বিস্তারের প্রতিদ্বন্দ্বিতায় অবতীর্ণ হয়। এমতাবস্থায় তাকে ১৮০৭ সালে ফ্রান্সের সাথে তিলসিতের সন্ধি, ১৮১৩ সালে রাশিয়ার সাথে গুলোস্তানের সন্ধি, ১৮১৪ সালে ব্রিটেনের সাথে তেহরানের সন্ধি এবং ১৮২৪ সালে পুনরায় রাশিয়ার তার্কেস্যানচাই সন্ধি স্থাপন করে এই বৃহত্তম শক্তির ভারসাম্য রক্ষা করতে হয়। এতে বিদেশিদের প্রভাব বাড়তে থাকে। এমনিভাবে পারস্যের স্বাধীনতা বিলুপ্তির সম্ভাবনা দেখা দেয়। ১৮৩৪ সালে ফাতেহ আলী শাহ মারা যান।
পারস্যের ইতিহাসে কাজার বংশের শাসন একটি বিশিষ্ট স্থান দখল করে আছে। এ বংশের শ্রেষ্ঠ শাসক ছিলেন ফতেহ আলী শাহ। তিনি স্বীয় মেধা, যোগ্যতা দ্বারা সাম্রাজ্যকে একটি দৃঢ় ভিত্তি প্রদান করেন।