যদিও ডার্কনেট এর বেশির ভাগই ক্ষতি করে না এমন ধরনের কিন্তু কিছু প্রসিকিউটর এবং সরকারি সংস্থা এটা ভেবে উদ্বিগ্ন যে, অপরাধমূলক কর্মকান্ডের জন্য এটি একটি স্বর্গ স্বরূপ আশ্রয়স্থল। ডিপডটওয়েব এবং অল থিংস ভাইসের মতো বিশেষায়িত সংবাদ পত্র ডার্ক ওয়েব এবং তাদের সেবা সম্পর্কে কাভারেজ এবং ব্যবহারিক তথ্য প্রদান করে। দ্যা হিডেন উইকি এবং এর মিরর এবং লুকানো উইকি এবং ফরকে যেকোন প্রদত্ত সময়ে বিষয়বস্তুর বৃহত্তম ডিরেক্টরি রয়েছে।

.onion সম্বলিত লিঙ্কের জনপ্রিয় উৎসের মধ্যে রয়েছে পেস্টবিন, ইউটিউব, টুইটার, রেডিট এবং অন্যান্য ইন্টারনেট ফোরাম। ডার্কসান এবং রেকর্ডেড ফিউচারের মতো বিশেষায়িত কোম্পানি আইন প্রয়োগের উদ্দেশ্যে ডার্ক ওয়েবে ঘটে যাওয়া সাইবার অপরাধের উপর নজর রাখে। ২০১৫ তে ঘোষণা করা হয় যে, ইন্টারপোল এক ধরনের বিশেষ প্রশিক্ষণ প্রদান করে, এতে টর সম্পর্কে টেকনিক্যাল তথ্য দেয়া, সাইবার সিকিউরিটি এবং কৃত্রিম ভাবে ডার্কনেট মার্কেট সরিয়ে ফেলার উপায় শিখানো হয়।
২০১৩ এর অক্টোবরে যুক্তরাজ্যের জাতীয় অপরাধ সংস্থা এবং জিসিএইচকিউ সাইবার অপরাধের দিকে দৃষ্টি দেয়ার উদ্দেশ্যে ‘জয়েন্ট অপারেশন সেল’ এর গঠন ঘোষণা করে। ২০১৫ এর নভেম্বরে এই দলকে শিশু শোষণ এবং ডার্ক নেটে ঘটে যাওয়া অন্যান্য সাইবার অপরাধের মোকাবেলা করার জন্য বলা হবে।
সাংবাদিকতা
অনেক স্বতন্ত্র সাংবাদিক, বিকল্প সংবাদ সংস্থা এবং শিক্ষাবিদ অথবা গবেষকরা ডার্কনেট সম্পর্কে বলা এবং লিখার ক্ষেত্রে অনেক প্রভাবশালী হয়ে উঠেছেন, তারা ডার্কনেটকে জনগনের সামনে আরো পরিষ্কার করে তুলে ধরছেন।
ডার্কনেট সম্পর্কে জেমি বার্টলেট

জেমি বার্টলেট টেলিগ্রাফের একজন সাংবাদিক এবং টেক ব্লগার এবং তিনি ইউনিভার্সিটি অব সাসেক্স এর সাথে সংযুক্ত সেন্টার ফর দ্য এনালাইসিস অফ সোশ্যাল মিডিয়া ফর ডেমোস এর পরিচালক। তার বই ডার্ক নেট, এতে বার্টলেট ডার্কনেট জগত এবং বিভিন্ন প্রেক্ষাপটে মানুষের আচরনের উপর এর প্রভাব নিয়ে বর্ণনা করেছেন। উদাহরণস্বরূপ, বইটি একজন যুবতীর একটি কাহিনী দিয়ে শুরু করা হয়, সে যুবতী অনলাইনে নগ্ন হওয়ার মাধ্যমে ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া পেতে চায় এবং আত্ম সম্মান গড়ে তুলতে চায়। ঘটনাচক্রে তাকে পাওয়া যায় সোশ্যাল মিডিয়া সাইটে, যেখানে তার পরিবার এবং বন্ধুরা তার নগ্ন ছবিতে প্লাবিত হয়ে পড়েছিলো। এই গল্প বিভিন্ন মানবিক আচরণকে তুলে ধরে, যা ডার্কনেট অনুমোদন দেয়।কিন্তু পাঠককে এটাও মনে করিয়ে দেয় কিভাবে ডার্কনেটের মতো আবৃত নেটওয়ার্কে যোগদান করার মাধ্যমে একটি বৃহৎ ওয়েব থেকে আলাদা হয়ে যেতে হয়। বার্টলেট এর প্রধান উদ্দেশ্য হল ডার্কওয়েব নিয়ে অনুসন্ধান করা এবং সমাজের উপর এর প্রভাব সম্পর্কে জানা। তিনি বিভিন্ন উপ-সংস্কৃতির অনুসন্ধান করেন, যার মধ্যে কিছুর সমাজের প্রতি ইতিবাচক ইতিবাচক প্রভাব রয়েছে এবং কিছুর নেতিবাচক ।

জুন ২০১৫ এ বার্টলেট বিষয়টিকে আরো পরীক্ষা করে একটি টেডটক দেন। তার কথার শিরোনাম দেয়া হয়েছিলো “কিভাবে রহস্যময় ডার্কনেট যাচ্ছে মূলধারায়”, একটি ওয়েবসাইটের উদাহরন দিতে গিয়ে তিনি সিল্ক রোডকে দেখান এবং এটি শ্রোতাদের সামনে ডার্কনেটের পিছনের ধারণাকে তুলে ধরে। তিনি বৃহত্তর বাণিজ্যিক ওয়েবের ভোক্তা সাইট গুলোর সাথে ডার্কওয়েবের সাইট গুলোর ডিজাইনের সাদৃশ্যতা তুলে ধরেন। তারপর তিনি কিভাবে একটি অপারেটিং সিস্টেম অনিশ্চিত হতে পারে, তার উদাহরন দেখান। তিনি বিশ্বাস করেন যে, ডার্কনেটে সেসব উচ্চ ঝুঁকি সম্পন্ন মার্কেট মূলত নতুন প্রযুক্তির জন্ম দেয়, যা ভবিষ্যতে সকল মার্কেটের ক্ষেত্রে প্রয়োগ করা যেতে পারে। যেহেতু তিনি উল্লেখ করেছেন, বিক্রেতারা সবসময়ই পাশাপাশি পৌঁছানো এবং নিজেদের রক্ষা করার জন্য নতুন উপায় ভেবে চলেছে, ফলে ডার্ক নেট হয়ে উঠেছে বিকেন্দ্রীভূত, আরো গ্রাহক বন্ধুত্বপূর্ণ, সমালোচনা করা কঠিন এবং আরো উদ্ভাবনী। যেহেতু আমাদের সমাজ অনলাইনে নিজের গোপনীয়তা বজায় রাখা নিয়ে আরো উপায় খুঁজে চলেছে, সেহেতু ডার্কনেটে ঘটে চলা উপায় গুলো শুধু উদ্ভাবনীই নয়, কিন্তু বাণিজ্যিক অনলাইন ওয়েবসাইট এবং বাজারের ক্ষেত্রে ভীষণ উপকারী হতে পারে।
ব্ল্যাক হোল রহস্য! আর্টিকেলটি পড়তে ক্লিক করুন
ভাইস নিউস
ভাইস নিউস ভাইস মিডিয়া ইনকর্পোরেটের চলিত বিষয়াবলির চ্যানেল, যা দৈনন্দিন তথ্যচিত্র বিষয়ক প্রবন্ধ এবং ভিডিও নিজের ওয়েবসাইট এবং ইউটিউব চ্যানেলের মাধ্যমে প্রকাশ করে। এটি নিজেকে নিজের অনূর্ধ্ব রিপোর্ট এবং অফ-স্ট্রিম গল্পের কভারেজের মাধ্যমে প্রমোট করে। ভাইস মিডিয়া ইনকর্পোরেট ২০১৩ এর ডিসেম্বরে প্রতিষ্ঠিত হয় এবং নিউ ইয়র্ক সিটিতে অবস্থিত, কিন্তু এর সারা বিশ্বে কার্যালয় রয়েছে। ভাইস নিউসের প্রতিষ্ঠার পর থেকেই এটি উদীয়মান ঘটনা এবং ব্যাপক সমস্যা এমন ভাবে প্রচার করেছে, যা অন্যান্য মিডিয়া করতে পারে নি বা পারে না। একটি “বিকল্প” নিউস স্টেশন হিসাবে এটি অনেক বিতর্কমূলক এবং অসম্পাদিত বিষয়ে প্রতিবেদন তৈরি করতে পারে। তেমনই একটি বিষয় ডার্কনেট। ভাইসের এখন এমন অনেক গল্প আছে যা ডার্কনেটের বিভিন্ন বিষয় এবং এর গুপ্ত মার্কেটকে পরীক্ষা করে, যার মধ্যে রয়েছে ডার্কনেটের অবৈধ পশু শিকার, শিশু পর্ণোগ্রাফি, এবং ওষুধ সম্পর্কিত বিষয়।
অন্যান্য মাধ্যম
এবিসি নিউজের মত সনাতন মিডিয়া এবং সংবাদ চ্যানেলও ডার্কনেটকে পরীক্ষা করে এমন নিবন্ধ প্রকাশ করেছে। ভেনিটি ফেয়ার ম্যাগাজিন অক্টোবর ২০১৬ এ ‘দ্য আদার ইন্টারনেট’ শিরোনামে একটি নিবন্ধ প্রকাশ করে। সে নিবন্ধে ডার্কনেটের উত্থানের কথা বলা হয়েছে, সাথে বলা হয়েছে যে আইন অমান্যকারী ডিজিটাল প্রান্তরে পুরস্কার বড় ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। সেখানে উল্লেখ রয়েছিল যে ভালনেরাবিলিটি নেটওয়ার্কের ডিফেন্সে একটি দুর্বলতা হিসাবে কাজ করে। অন্যান্য বিষয়ের মধ্যে রয়েছে প্রচলিত কালো বাজারের ই-কমার্স সংস্করণ, দ্যরিয়েলডিল থেকে সাইবার অস্ত্র ব্যবসা, এবং অপারেশন নিরাপত্তার ভূমিকা।
ডার্কনেট মার্কেট – ইন্টারনেট জগতের লুকায়িত সর্ববৃহৎ লেনদেন বাজার আর্টিকেলটি পড়তে ক্লিক করুন