জামি আত তাওয়ারিখ কি?

08 copy

মুসলিম চিত্রকলার ইতিহাসে ‘জামি আত তাওয়ারিখ’ এর পাণ্ডুলিপি চিত্রাবলী একটি বৈশিষ্ট্যপূর্ণ অধ্যায়ের সূচনা করে। এ পাণ্ডুলিপিতে মেসোপটেমীয় প্রভাব স্তিমিত হয়ে চীনা প্রভাব প্রকট আকার ধারণ করে।

আদি জামি আত তাওয়ারিখ

ইলখানী বংশের শ্রেষ্ঠ শাসক সুলতান গাজানখান এবং ভ্রাতা উলজাইতুর রাজত্বকালে প্রধানমন্ত্রী রশীদউদ্দীন ফজলশাহ ‘জামি আত তাওয়ারিখ’ নামে একখানি মূল্যবান ঐতিহাসিক গ্রন্থ রচনা করেন। প্রধানমন্ত্রী রশীদ উদ্দিন ফজল ছিলেন একজন চিকিৎসক এবং রাজনীতিবিদ। চিকিৎসা এবং রাজনীতির সঙ্গে সঙ্গে তিনি ঐতিহাসিক হিসেবেও যথেষ্ট খ্যাতি অর্জন করেন। তিনি ছিলেন সুন্দর হস্তাক্ষরের অধিকারী। গাজান খানের প্রচেষ্টায় ইলখানী চিত্রকলার সূত্রপাত হয়। জামি-আত-তাওয়ারিখ সমসাময়িক মোঙ্গল ইতিহাসের উপর লেখা একখানা অমর গ্রন্থ।

জামি-আত-তাওয়ারিখ’ চিত্রাবলী

জামি আত তাওয়ারিখ চিত্রাবলীতে মোটা ব্রাশ অপেক্ষা সূক্ষ্ম নিব এর মত তীক্ষ্ম সুচাগ্র ও সুদৃঢ় রেখার মাধ্যমে প্রতিকৃতি ও পরিবেশ অঙ্কিত হয়েছে। এ চিত্রসমূহে পোশাক-পরিচ্ছদ বৃক্ষ-লতা-পাতা তথা প্রাকৃতিক দৃশ্যকেই নির্দেশ করে।

এ ডিনবরায় সংরক্ষিত এ সকল চিত্রাবলীর মধ্যে

  • (১) নীলনদে বাক্সবন্দি ভাসমান শিশু মুসা
  • (২) ফিলিস্তিনদের মন্দির ধ্বংসরত স্যামসন
  • (৩) ইউফিসাসের সাতজন নিদ্রামগ্ন ব্যক্তি
  • (৪) কাবা শরিফে কালো পাথর স্থাপনরত মুহাম্মদ (সাঃ)।

জামি আত তাওয়ারিখের চিত্রাবলীতে একাধিক শিল্পীকে নিয়োগ করা হয়। এ পাণ্ডুলিপি চিত্রায়নে বিপরীতধর্মী সেলজুক ও চীনা শিল্পরীতি প্রয়োগ করা হয়। ইলখানী বংশের শ্রেষ্ঠ সুলতান গাজান খানের পৃষ্ঠপোষকতায় চীনা শিল্পরীতি প্রয়োগের মাধ্যমে মুসলিম শিল্পকলাকে সমৃদ্ধ করা হয়েছে নিঃসন্দেহে।