মুসলিম রাষ্ট্রের আয়ের অন্যতম উৎস ছিল খারাজ। ইহা ছিল মুসলিম রাষ্ট্রে বসবাসকারী অমুসলমান প্রজাদের উপর ধার্য্যকৃত ভূমিকর। মদিনায় প্রতিষ্ঠিত ইসলামি প্রজাতন্ত্রের আর্থিক বুনিয়াদকে মজবুত করার জন্য রাসুলুল্লাহ (সাঃ) পাঁচ প্রকার কর নির্ধারণ করেন। খারাজ ছিল তার মধ্যে অন্যতম।
খারাজের উৎপত্তি
মহানবী (সাঃ) আরবদেশে প্রথম এ কর ধার্য্য করলেও এটা কোন নতুন কর নয়। ইসলামের আবিভার্বের কালে পারস্যে এ জাতীয় কর ট্রি বিউটাস ক্যাপিটাস ও রোমান সাম্রাজ্যে ট্রিবিউটাস সলি নামে চালু ছিল। মহানবী (সাঃ) খাইবার বিজয়ের পর সেখানে প্রথম খারাজ ধার্য্য করেন। খারাজ প্রদানের বিনিময়ে সেখানকার কৃষকগণ জমি চাষাবাদ করার অধিকার লাভ করেন।
খারাজি করের পরিমাণ
মহানবী (সাঃ)-এর আমলে এ করের পরিমাণ ছিল ভূমিতে উৎপন্ন দ্রব্যের অর্ধেক অংশ। খোলাফায়ে রাশেদীনের আমলেও অমুসলমান প্রজাদের জমির উৎপাদিত ফসলের অর্ধেক অংশ খারাজ আদায় করা হত। উমাইয়া আমলে এর পরিমাণ হ্রাস করে পাঁচ ভাগের এক ভাগ করা হয়।
খারাজি অর্থের ব্যয়ের খাত
মহানবীর আমলে খারাজ থেকে আদায়কৃত অর্থ সামরিক খাতে ব্যয় করা হত। এ উৎস থেকে আদায়কৃত অর্থ সেনাবাহিনীর লোকদের মধ্যে বন্টন করে দেয়া হত। একজন বিবাহিত সৈনিক অবিবাহিত সৈনিকের দ্বিগুণ অর্থ পেত।
খোলাফায়ে রাশেদীনের আমলে খারাজ আদায়ের ব্যাপারে যে নীতি গৃহীত হত উমাইয়া যুগে তা অনুসৃত হয়নি। ফলে খারাজ নিয়ে প্রকট সমস্যা দেখা দেয়। পরবর্তীতে ওমর বিন আব্দুল আজিজের শান্তিপূর্ণ শাসনামলে খারাজ সংগ্রহের ব্যাপারে খোলাফায়ে রাশেদীনের নীতি পুনঃপ্রর্বতন করা হয়।