ইশতিকলাল পার্টি কী?

ইশতিকলাল পার্টি

১৯৫৬ সালের ২ মার্চ মরক্কো দেশটি স্বাধীনতা লাভ করে। এ স্বাধীনতা আন্দোলন পঞ্চম মুহাম্মদ ও ইশতিকলাল দলের ভূমিকা প্রশংসনীয়। ১৯৫৫ সালে এ দল আলজেরিয়ায় জাতীয় মুক্তিফ্রন্ট গঠন করে। পঞ্চম মুহাম্মদের নেতৃত্বে স্বাধীনাত আন্দোলন যখন গতিময়তা লাভ করে তখন ফ্রান্স বাধ্য হয়ে ১৯৫৬ সালের ২ মার্চ এবং ৭ এপ্রিল স্পেন ও মরক্কোর স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব স্বীকার করে নেয়। এভাবে মরক্কোর জনগণ পঞ্চম মুহাম্মদের নেতৃত্বে ইশতিকলাল দলের পতাকাতলে সমবেত হয়ে দেশের স্বাধীনতা সূর্যকে ছিনিয়ে আনে।

ইশতিকলাল পার্টি

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় মরক্কোর জাতীয়তাবাদী আন্দোলন এক নতুন রূপ লাভ করে। ১৯৪৩ সালে মরক্কোর জাতীয়তবাদী নেতারা প্রথমবারের মতো ইশতিকলাল নামে একটি রাজনৈতিক দল গঠন করে। অনেকগুলো ছোট ছোট দলের সমন্বয়ে গঠিত এ দল খুব শীঘ্রই মরক্কোবাসীর নিকট জনপ্রিয় সংগঠনে পরিণত হয়। সুলতান নিজেও আন্দোলনের প্রতি সমর্থন জ্ঞাপন করেন। ফলে নির্বিঘ্নে এ আন্দোলন চলতে থাকে। ১৯৪৬ থেকে ১৯৪৭ সালে এ দল দেশের ভিতর বেশ সমর্থন লাভ করে এবং কায়রো ও নিউইয়র্কে তাদের অফিস খোলা হয়। কিন্তু ১৯৫২ সালে কাসাব্লাংকার এক চরম দাঙ্গাহাঙ্গামা দেখা দেয়। এ দাঙ্গাহাঙ্গামা শুরু হলে ফরাসি সরকার ইশতিকলাল দলকে বেআইনি ও নিষিদ্ধ ঘোষণা করে এবং বহু নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়।

ইশতিকলাল দল ও মরক্কোর স্বাধীনতা

সুলতান পঞ্চম মুহাম্মদ ইশতিকলাল দল, ডেমোক্রেট দল ও নির্দলীয়দের নিয়ে একটি নতুন সরকার গঠনের প্রচেষ্টা চালান। ১৯৫৬ সালের ২ মার্চ ফরাসি সরকার এক নতুন চুক্তি সম্পাদন করে স্বাধীনতা প্রদানে বাধ্য হয়। একই বছর এপ্রিল মাসে স্পেনের সাথে চুক্তি হয়। এ চুক্তির মাধ্যমে স্পেনও স্বাধীনতা স্বীকার করে নেয়। ফলে মরক্কো হতে স্পেন ও ফরাসি সৈন্য সরে যেতে শুরু করে। এভাবে স্পেনীয় ফরাসি উপনিবেশ হতে মরক্কো স্বাধীনতা লাভ করে।

মরক্কোর স্বাধীনতা যুদ্ধ ছিল উত্তর আফ্রিকার ইতিহাসে এক স্মরণীয় ঘটনা। যাতে নেতৃত্ব প্রদান করে ইশতিকলাল দল। ফলে মরক্কোবাসীরা দীর্ঘ ত্যাগতিতিক্ষা ও লড়াই সংগ্রামের মাধ্যমে তাদের কাঙ্ক্ষিত স্বাধীনতা অর্জন করে। এ স্বাধীনতা অর্জনের পিছনে যে নামটি সবচেয়ে বেশি উচ্চারিত হয় তা হচ্ছে ইশতিকলাল দলের পঞ্চম মুহাম্মদ।