ইন্তিফাদা কি?

ইন্তিফাদা

১৯৪৮ সালে ১৪ মে মধ্যরাতে তেল আবিবের জাদুঘরে ডেভিড বেনগুরিনের নেতৃত্বে প্যালেস্টাইনে ইসরাইলের জন্ম হয়। এ জন্মলগ্নের সাথে সাথে ইহুদি রাষ্ট্র ইসরায়েল প্যালেস্টাইনসহ আরব বিশ্বের আক্রমণের শিকার হতে থাকে। ইসরাইল আমেরিকার বন্ধু রাষ্ট্র হওয়ায় আরব বিশ্ব এসব আক্রমণে সুবিধা করতে পারে নি; বরং ১৯৪৮, ১৯৬৭ ও ১৯৭৩ সালের আরব ইসরায়েল যুদ্ধে আরবরা ইসরায়েলের নিকট পরাজিত হয়। এমতাবস্থায় ৮০-এর দশকের শেষের দিকে প্যালেস্টাইনরা স্বাধীনতা অর্জনের জন্য ইন্তেফাদা (INTIFADA)বা গণঅভ্যুত্থানের ডাক দেয়।

ইন্তেফাদারঃ ইন্তেফাদা একটি আরবি শব্দ। যার অর্থ গণঅভ্যুত্থান বা আন্দোলন সংগ্রাম।প্যালেস্টাইন-ইসরায়েল দ্বন্দ্বের উৎপত্তি, বিভিন্ন ঘটনার মধ্য দিয়ে PLO এর বাধাদান আন্দোলন এবং আরব জাতিসমূহের মধ্যকার রাজনীতির উঠানামা ইন্তেফাদা গঠনের অন্যতম কারণ। ১৯৮৭ সালের ৮ ডিসেম্বের প্যালেস্টাইনের স্বাধীনতা আন্দোলনকে গণঅভ্যুত্থানের রূপ দানের জন্য ইন্তেফাদা গঠিত হয়। ইন্তেফাদা গঠনের ফলে প্যালেস্টাইনের স্বাধীনতা আন্দোলনি একটি নতুন নেতৃত্ব লাভ করে এবং এ আন্দোলনকে ইন্তেফাদা একটি প্রাতিষ্ঠানিক রূপ প্রদান করতে সক্ষম হয়। ইন্তেফাদা এর মাধ্যমে PLO কিছুটা গণতন্ত্র, একতা নতুনত্বের স্বাদ পেল। ইন্তেফাদার মাধ্যমে প্যালেস্টাইনীরা শপথ করে যে, তারা তাদের মূল্যবান স্বাধীনতা ন্যায়বিচার ও গণতন্ত্রের রক্ষার্থে অদৃষ্টপূর্ব কষ্ট সহ্য করবে, নিজেদের ত্যাগ করবে এবং সবকিছু সহ্য করবে। ইন্তেফাদা-এর প্রতিক্রিয়া ও ফলাফল ছিল নাটকীয় পর্যায়ের এবং তা ছিল আর্থ-সামাজিক, রাজনৈতিক এবং মনস্তাত্ত্বিক। ইন্তেফাদা-এর সবচেয়ে দৃশ্যমান ফলাফল ছিল ইয়াসির আরাফাতের পশ্চিম তীর ও গাজা উপত্যকায় স্বাধীনতা ঘোষণা।

প্যালেস্টাইনের স্বাধীনতার প্রশ্নে ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতার নীতি একটি কূটকৌশল ছাড়া আর কিছুই নয়। কেননা ইসরায়েল যেখানে প্রতিনিয়ত নির্বিচারে ফিলিস্তিনিদের হত্যা করছে আর যুক্তরাষ্ট্র কোনো প্রতিবাদ না করে বসে বসে দেখছে, সেখানে স্বাধীনতা আশাই করা যায় না।