অরোরার বাংলা অর্থ “মেরুজ্যোতি“। উচ্চ অক্ষাংশ ও দক্ষিন অক্ষাংশে চার্জিত কনার প্রতিক্রিয়ার কারনে যে আলোকীয় প্রাকৃতিক ঘটনা দেখা যায়, তাকেই অরোরা বলে। উত্তর অক্ষাংশে এটি অরোরা বোরিয়ালিস বা নর্দার্ন লাইটস বা সুমেরুজ্যোতি নামে পরিচিত। আর দক্ষিণে এর নাম অরোরা অস্ট্রালিস বা সাউদার্ন লাইটস বা কুমেরুজ্যোতি।
অরোরা কেন ঘটে?
সুর্য পৃথিবী থেকে প্রায় ১৪কোটি ৯৬ লক্ষ কি.মি দুরে অবস্হিত। সুর্যের উপরিভাগের তাপমাত্রা ৫৭৭৮ কেলভিন। সুর্যের অভ্যন্তরে ঘটে চলেছে নিউক্লিয়ার ফিউশন বিক্রিয়া। হাইড্রোজেন পুড়ে উৎপন্ন হচ্ছে হিলিয়াম, সাথে সৃষ্টি হচ্ছে আলো ও প্রচন্ড উত্তাপ। অভ্যন্তরীন এ প্রক্রিয়ায় কখনও সুর্যের অভ্যন্তরভাগ থেকে আগুনের শিখার মতো অংশ মহাশুণ্যে সজোড়ে নিক্ষিপ্ত হয়। একে বলা হয় সৌরঝড়। একে Coronal mass ejection ও বলা হয়, কারন এর মাধ্যমে সুর্য তার কিছু পরিমান ভর শুণ্যে নিক্ষেপ করে৷ কিন্তু তা নির্গত হয় প্রচন্ড শক্তিরুপে।

এই শক্তি মুলত নির্গত করে বহুসংখ্যক চার্জিত কণা, যা চারদিকে ছড়িয়ে যেতে থাকে। সুর্য পৃথিবী থেকে যথেষ্ট দুরত্বে থাকলেও সৌর বায়ু বা ঝড়ের প্রভাব অনেক দুর পর্যন্ত বিস্তুৃত।এভাবে সৌরঝড়ের কারনে চার্জিত কণা ছড়িয়ে পড়ার সময় যখন তা পৃথিবীর ম্যাগনেটোস্ফিয়ারের কাছাকাছি আসে বা প্রবেশ করে তখন বায়ুমন্ডলের থার্মোস্ফিয়ারে থাকা অক্সিজেন ও নাইট্রোজেন পরমাণুর সাথে ম্যাগনেটোস্ফিয়ার থেকে আসা সে চার্জিত কণিকাসমূহের (প্রধানত ইলেক্ট্রন, কিছু ক্ষেত্রে প্রোটন) সংঘর্ষের ফলেই অরোরা সৃষ্টি হয়। কারন, সংঘর্ষের কারণে পরমাণু বা অণুসমূহ কিছু শক্তি লাভ করে চার্জিত কণিকাসমূহের কাছ থেকে যা অভ্যন্তরীণ শক্তি হিসেবে সঞ্চিত হয় ও পরবর্তীতে তা আলোকশক্তি রুপে বিকিরিত হয়।